Visit Our Youtube Channel
https://youtu.be/uRO3lKlSsbU 10এপ্রিল 1755 সালে জার্মানির সাস্কনি প্রদেশের মেসেন শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের পিতা ও পথপ্রদর্শক ডাক্তার ক্রিশ্চিয়ান ফ্রেডরিক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান, প্রতিবছর 9 জুলাই ওই মহান ব্যক্তির birth anniversary পালন করা হয়, এবারও তা হয়েছে, এবং ওই দিনটিকে প্রতিবছরের ন্যায় সমগ্র পৃথিবীর মানুষ সততার সাথে বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি আজ থেকে 200 বছরেরও বেশি আগে 1796 সালে স্যামুয়েল হ্যানিম্যান জার্মানিতে প্রবর্তন করেন, ধীরে ধীরে এই চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাপক প্রসার লাভ করে এবং সময়ের সাথে সাথে All over the world এবং ভারতবর্ষেও এই চিকিৎসা পদ্ধতি ছড়িয়ে পড়ে
INDIA তে ঠিক কোন সালে হোমিওপ্যাথির প্রবর্তন হয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা নেই, তবে উনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে বিশেষত মিশনারি সোসাইটি এর মাধ্যমে হোমিওপ্যাথি ভারতবর্ষে প্রবেশ করে, তথ্য অনুযায়ী John Martin Hoeningberger কে ভারতবর্ষে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রবর্তক হিসেবে ধরা হয়, তিনি 1835 সালে স্বয়ং হ্যানিম্যান এর কাছে হোমিওপ্যাথি শেখেন, তারপর 1839 সালে তৎকালীন ভারতবর্ষের লাহোর শহরে প্রথম হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শুরু করেন, এই সময় পাঞ্জাবের মহারাজা রঞ্জিত সিং কে চিকিৎসা করে দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে ভালো করে তোলেন যা INDIA তে Homoeopathy প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, পরবর্তীকালে 1860 সালে Hoeningberger কলকাতায় আসেন এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শুরু করেন, তখন সমগ্র বাংলায় কলেরা রোগে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত, Hoeningberger হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে বহু কলেরা রোগীকে সুস্থ করে তোলেন এবং কলেরা ডাক্তার নামে খ্যাতি অর্জন করেন,
ভারতবর্ষে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রবর্তন এর ক্ষেত্রে আরো কয়েকজনের নাম খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেমন- Dr. Mullen, যিনি কলকাতার ভবানীপুরে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করাতেন, Dr. Henry westly, Dr. Leopold. Salzer উল্লেখযোগ্য
আনুমানিক 1846 সালে দক্ষিণ ভারতের সর্বপ্রথম হোমিওপ্যাথি হাসপাতাল খোলা হয়, সার্জন Samual Brooking এর তত্ত্বাবধানে, তারপর 1851 সালে ডেপুটি গভর্নর অফ বেঙ্গল Sir, John Hunter little এর নির্দেশে কলিকাতায় "Native Homoeopathy Hospital and free Dispensary " খোলা হয়, এর পরবর্তী সময় থেকেই সরকারি আমলা, সৈনিক ও উচ্চবর্গের বাবু সমাজে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জনপ্রিয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং অনেকেই হোমিওপ্যাথি শেখার আগ্রহী হয়ে পড়েন
এই Time এ একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব যিনি ভারতবর্ষে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রসার ও গ্রহণযোগ্যতায় বড় ভূমিকা নেন তিনি হলেন রাজা রাজেন্দ্রলাল দত্ত, তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন এলোপ্যাথি চিকিৎসক যিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার কার্যকারিতা বুঝতে পেরে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে পরিবর্তিত হন 1861 সালে, 1863 সালে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নিজে ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল দত্তের কাছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করিয়ে আরোগ্য লাভ করেন যা বাংলা ও ভারতবর্ষে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রসারে বড় ভূমিকা নেয়, পরবর্তী সময়ে অনেক বিশিষ্ট এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক এবং এমনকি অন্য পেশায় যুক্ত অনেক জ্ঞানী ব্যক্তিত্ব হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার কার্যকারিতা বুঝতে পেরে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকে পরিবর্তিত হন, এবং হোমিওপ্যাথিকে ভারতবর্ষের স্থায়ীভাবে স্থাপিত হতে সাহায্য করেছেন, এদের মধ্যে ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার, ডাক্তার বিএল ভাদুড়ী, ডাক্তার প্রতাপ চন্দ্র মজুমদার, ডাক্তার লিওপোল্ড সেলজার, ডাক্তার লোকনাথ মিত্রের নাম উল্লেখযোগ্য
1881 সালে " Callcutta Homoeopathy Medical College and Hospital " নামে ভারতবর্ষের সর্বপ্রথম হোমিওপ্যাথি কলেজ খোলা হয় কলকাতায়, যার ফলে শিক্ষিত হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের সংখ্যা খুবই দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে,
Twenty-first century এর প্রথমদিকে হোমিওপ্যাথির ব্যাপক প্রসারের ফলে অর্থ লোভ' ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার নিয়ন্ত্রণের অভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো অনেক ভুয়ো হোমিওপ্যাথি সংস্থা ও হোমিওপ্যাথি ডিগ্ৰী শুরু হলো যা, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার গুণমান অনেকটাই কমিয়ে দিল এবং জন্ম হতে থাকলো হাতুড়ে বা Quack হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের, যা আজও বর্তমান
এই পরিস্থিতিতে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ও শিক্ষার গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে 1941 সালে একটি " Homeopathy General Council " গঠন করে এবং 1944 সালে দিল্লিতে " All India Institute of Homoeopathy " গঠন করে, কিন্তু এই পদক্ষেপ গুলো খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি, পরবর্তী সময়ে ভারত বর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর ভারত সরকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মান উন্নয়ন ও গুণমান রক্ষার জন্য ভারতের প্রথম স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজকুমারী অমৃত কৌর এর তত্ত্বাবধানে 1948 সালে Homeopathy Inquiry Committee " গঠন করে, এই Inquiry Committee র রিপোর্ট অনুযায়ী 1962 সালে " Homeopathy Advisary Committee " গঠন করা হয়, পরবর্তী কিছু সময় এই Advisary Committee এর তত্ত্বাবধানেই হোমিওপ্যাথির গুণমান নিয়ন্ত্রিত হয়, এরপর 1973 সালে Homeopathy Council Bill সংসদে পাস হয় এবং তখন থেকেই ভারত সরকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কে একটি জাতীয় ও বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বলে স্বীকৃতি দেয় তারপর 1974 সালে Central Council for Homoeopathy গঠিত হয় যা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ও শিক্ষার গুণগত মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আজও বিদ্যমান
1995 সালে " Department of Indian System of Medicine and Homoeopathy " স্থাপিত হয় যা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর এর অন্তর্গত একটি পৃথক সংস্থা, পরবর্তীকালে 2014 সালে এই সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় Department of ' AYUSH ' বর্তমানে এই AYUSH মন্ত্রক হোমিওপ্যাথি ও অন্যান্য Alternative Medicinal System এর প্রচার প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা নিচ্ছে
বর্তমানে ভারতবর্ষে প্রায় 218 টি হোমিওপ্যাথি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে B. H.M.S (Bachelor of Homoeopathy Medicine and Surgery ) ডিগ্রী প্রদান করা হয় যার সময় কাল সাড়ে পাঁচ বছর, এই কলেজগুলি থেকে প্রতিবছর প্রায় 8000 ডাক্তার ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যোগদান করছে এবং স্বাস্থ্য উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে
বর্তমানে ভারতবর্ষে হোমিওপ্যাথির উপর কোন স্বীকৃতি Diploma Course করানো হয় না, 1989 সাল থেকে ভারতবর্ষে MD- Homoeopathy Course চালু হয়েছে, তাই বর্তমানে হোমিওপ্যাথিতেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন যেটা অনেকেরই জানা নেই, বর্তমানে ভারতবর্ষে প্রায় 15 টি কলেজে MD- Homoeopathy ডিগ্রী প্রদান করা হয় যার মধ্যে কলকাতাস্থিত National Institute of Homoeopathy অন্যতম
বিগত কয়েক বছর ধরে হোমিওপ্যাথির ওপর Ph.D ডিগ্রি ও প্রদান করা হচ্ছে, এইসব কারণে বর্তমানে হোমিওপ্যাথি বিজ্ঞান সম্মত ভাবে আরো উন্নত হচ্ছে
হোমিওপ্যাথি একটি বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং এর উন্নয়নকল্পে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে 1978 সালে " Central Council for Research in Homoeopathy " নামে একটি সংস্থা গঠন করা হয় যা নিয়মিতভাবে হোমিওপ্যাথির উপর অসংখ্য গবেষণা চালাচ্ছে এবং গবেষণার ফলাফল বিভিন্ন Journal এ প্রকাশ করছে, এই সংস্থার এক একটি শাখা ভারতবর্ষের প্রায় প্রতিটি রাজ্যে (CCRH) আছে,
হোমিওপ্যাথি ওষুধের গুণমান এই চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারীতার একটি মূল শর্ত, তাই এর গুরুত্ব অনুধাবন করে 1976 সালে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে " Homoeopathy Pharmacopoea Laboratory " স্থাপিত হয়, এই সংস্থা হোমিওপ্যাথি ওষুধের গুণ মান বজায় ও নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত ওষুধের পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, বর্তমানে প্রতিটি রাজ্যস্তরেও " Homoeopathy Quality Assurance Department " রয়েছে যার কাজ হোমিওপ্যাথি ওষুধের গুণমান নিয়ন্ত্রণ করা, একটি সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতবর্ষে হোমিওপ্যাথির বাণিজ্যিক আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় 4700 কোটি টাকা যা প্রতিবছর প্রায় 20 শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সমগ্র বিশ্বে এই আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় 30 হাজার কোটি টাকা, এই বাণিজ্যিক উত্থান ঔষধ প্রস্তুতকারক বহুজাতিক সংস্থাগুলির ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে, যার ফলে সময় সময় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কে অবৈজ্ঞানিক বলে সমালোচনা করে এর জনপ্রিয়তা হ্রাস করার ব্যর্থ চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে
হোমিওপ্যাথি প্রকৃতপক্ষে বর্তমান যুগের Nuro Medicine যার ব্যাখ্যা ও প্রমাণ বিজ্ঞানীরা আগেই দিয়েছেন, তাই হোমিওপ্যাথির বিজ্ঞান ভিত্তিকতা নিয়ে কারোর সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই
হোমিওপ্যাথি ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুব কম তাই শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুব নিরাপদ, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সাধারণ সর্দি-কাশি, জ্বর, থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসায় ভালো ফল দিচ্ছে, Also হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার খরচা তুলনামূলকভাবে অনেক কম তাই ভারতবর্ষের মতো গরিব উন্নয়নশীল দেশের জন্য খুব উপযোগী, তাই হোমিওপ্যাথি ঔষধ ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে
No comments:
Post a Comment