* চিকুনগুনিয়া নামক রোগটি আমাদের খুব পরিচিত নয়, ভারতবর্ষে এর প্রাদুর্ভাব অতি সাম্প্রতিক, সম্ভবত এ বছরের মার্চ মাসেই মহারাষ্ট্রের নাসিকের মালেগাঁওতে এই রোগটির আবির্ভাব ঘটে, তারপর খুব দ্রুতই সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে, রোগটি ভাইরাস ঘটিত, টুগুভাইরিডি পরিবারের আলফা ভাইরাসগনের এই ভাইরাসটি চিকুনগুনিয়া ভাইরাস নামে পরিচিত, ওরফে ব্যাগি ক্রিক ভাইরাস, পৃথিবীতে সর্বপ্রথম 1952 সালে আফ্রিকার তানজানিয়াতে এই রোগের প্রকাশ ঘটে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, এরপর লোকটির লক্ষণ বিস্তার ও সম্ভাব্য কারণ নিয়ে ম্যারিস রবিনসন ও লুমনডেন 1955 সালে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, এরপরেই বিশ্ব এই রোগের ব্যাপারে অবহিত হয়, রোগটি সম্পূর্ণ মশাবাহিত, দিনের বেলায় Mosquito Aedes aegypti এই রোগের প্রধান বাহক, এই প্রজাতির এই মশকি ছাড়াও ইডিস এর আরো একটি প্রজাতি অ্যালবোপিকটাস (এশিয়ান টাইগার মসকিউটো বা বাঘ মশা) সম্প্রতি এই রোগের বাহক হয়েছে, কারণটা এই ভাইরাসের ভাইরাল প্রোটিন (প্রোটিন - 4)এর মিউটেনশন গত পরিবর্তন, রোগটি খুব দ্রুত বর্ষার পর মশকের বংশবৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, সংক্রমিত মশকের দংশনের 3 থেকে 12 দিন লাগে রোগের Symptoms প্রকাশ এর জন্য, সময়টিকে ইনকিউবেশন পিরিয়ড বলে, রোগটি দ্রুত সংক্রমণ শীল মশকবাহিত রোগ হওয়ায় আমাদের দেশে আদ্র আবহাওয়া খুব তাড়াতাড়ি বিস্তার লাভ ও করেছে,
রোগের লক্ষণগুলি কষ্টদায়ক, প্রচন্ড জ্বর (102 থেকে 106 ডিগ্রি ফারেনহাইট), চোখ লাল একটানা তীব্র মাথার যন্ত্রণা, গায়ের অসহব্যথা ও র্যাশ, প্রচণ্ড দুর্বলতা, নিদ্রাহীনতা, কখনো কখনো আলোর প্রতি আতঙ্ক বা (ফটোফোবিয়া) দেখা যায়, শিশুদের ও একটু বড় বাচ্চাদের আরোও অনেক রকম উপসর্গ দেখা যায়, গায়ে প্রচন্ড ব্যথা আর্থাইটিস এর মত লক্ষণ প্রকাশ পায়, রোগী সোজা হয়ে চলতে পারে না, বেঁকে যায়, তাই আফ্রিকান সুয়াহিলির ভাষায় এই disease টির নামকরণ হয়েছে চিকুনগুনিয়া বা যা বেঁকিয়ে দেয়, অন্যান্য ভাইরাল রোগের এই রোগটির কোন চিকিৎসা নেই, উপসর্গ ধরে তার চিকিৎসা করতে হয়, এমনিতেই রোগ লক্ষণ প্রকাশের পর রোগী 5-7 দিন কষ্টভোগ(Suffer) করেন, তারপর এমনিতেই সেরে যায়, রোগটি মৃত্যুবাহী নয়, কিন্তু চিকিৎসা-বিভ্রাটে মৃত্যু হতে পারে, ভারতের অন্ধপ্রদেশে এ বছরই প্রায় দুইলাখ ও লোক আক্রান্ত হয়েছিল, তখন প্রচুর এন্টিবায়োটিক ও Anti-inflammatory Medicine না খাওয়াই ভালো, সম্প্রতি চিকিৎসকেরা ক্লোরোকুইন (250 এমজি দিনে একবার) ব্যবহার করে অনেক ক্ষেত্রে ভালো ফলও পেয়েছেন, ডেঙ্গুর সাথে প্রাথমিক উপসর্গ অনেক মিল আছে রোগ টির, পার্থক্য ধরা যায় Mac Eliza Test করে, অর্থাৎ আইজিএম লিঙ্কড ইমিউনিটির উপস্থিতি পার্থক্য নির্ণয় কর, রোগটির থেকে বাঁচবার মত টিকাকরণ গবেষণা শুরু হলেও অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়, 2000 সালের গোড়ার দিকে এই টিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল
আরো পড়ুন :
বয়সন্ধির সময়ে বা কিশোর বয়সে চর্মরোগ বেশি দেখা যায় কেন ? (Why is psoriasis more visible during adolescence or in adolescence?)
https://healthbasket99.blogspot.com/2019/08/Health-adolescence.html
*****
No comments:
Post a Comment